Tuesday, 14 March 2023

'তোমার বুঝতে হবে'

 তোমার বুঝতে হবে,

ক্যানো পৃথিবীর এত রাস্তা থাকতেও আমি তোমার পথে হাঁটি।

তোমার বুঝতে হবে,

দুনিয়ার সমস্ত প্রেম ফেলে এসে ক্যানো আমি তোমার দরজায় কড়া নাড়ি।

তোমার বুঝতে হবে,

জাহান্নামের মতো কঠিন কষ্ট পেয়েও ক্যানো আমি তোমারে দেখলে শান্তি পাই।

তোমার বুঝতে হবে,

পুরো ভ্রমাণ্ডের সকল হতাশা আমার মাথায় চেপে বসার পরেও ক্যানো তোমার নামে হাসি।

তোমার বুঝতে হবে,

নমরুদের ল্যাংড়া মশার মতো ক্যানো শুধুমাত্র তুমিই আমার মগজের ভিতর ঘুরপাক খাও।

তোমার বুঝতে হবে,

সমস্ত কিছু বাদ দিয়ে ক্যানো আমি তোমারে নিয়াই কবিতা লিখি।

তোমার বুঝতে হবে,

আমার সমস্যাটা কী?

আমি কি পাগল?

তোমার বুঝতে হবে,

আমি তোমারে ভিষণ ভালোবাসি।


'তোমার বুঝতে হবে // মুহাম্মাদ আরজু

Sunday, 12 February 2023

'হাগ ডে এর শুভেচ্ছা'

 আমরা যারা পরিবারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি হয়ে উঠছি,যাদের টাকার উপর ভিত্তি করে একটা সংসার চলে,ক্লান্ত ও ব্যস্ততার কারণে মা-বাবার সাথে একটু দূরত্ব গড়ে উঠেছে তাদের জন্য এই হাগ ডে টা জরুরী।জরুরী না আমি বলি অত্যাবশ্যকীয়।


আগে যেই আমরা মা-বাবার কিংবা অতি আদরের কারোর বুকের সাথে অল টাইম লেগে থাকতাম আজ তাদের বুকে জড়ায় নিতে ক্যামন যেনো একটা উশখুশ লাগে কিংবা আমরা এতই ব্যস্ত যে সময় করে সময় বের করতে পারি না।আমি কত লাশকে বুকে জড়ায়া কাঁদতে দেখি কিন্তু জীবিত অবস্থায় বুকে নিতে এই আমরাই দ্বিধাবোধ করি।


মুন্না ভাই এমবিবিস মুভিতে সঞ্জয় যখন ক্লিনারকে বুকে জড়ায়া ধন্যবাদ দেয় তখন ক্লিনারের চোখের অবস্থা দেখছিলেন?কতটা ভালোবাসা প্রকাশ পাইছিলো ওইটা দেখছেন?আমরা যাদের ভালোবাসি তাদের বুকে নিলে অমায়িক একটা শান্তি আসে,মনের যত হতাশা আছে সব দূর হয়ে যায়।


বুকে জড়ানো সত্যিই একটা মেডিসিন।রাজ্যের যত কষ্ট অজানা আনন্দে রূপ নেয়,যত হতাশা নিমিষেই দূর হয়ে যায়,যত ক্লান্তি দূরন্তপণায় ছুটে যায়।আমরা হয়ে উঠি সদ্য জন্ম নেওয়া বাচ্চার মতো হাসিখুশি।যার আর চাওয়ার কিছুই নাই।


সময় যাচ্ছে,কোনো একদিন সবকিছু হাতের মুঠোয় পাবেন কিন্তু বুকটা শান্তি করার জন্য আপন মানুষদের পাবেন না।হিন্দি একটা গানের লাইন দিয়ে শেষ করছি,

'লাগ যা গালে কে ফির এ হাসিন রাত হো না হো

শায়াদ ফির ইস জানাম মে মুলাকাত হো না হো।'

Wednesday, 8 February 2023

'আমি নারীতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা চাই'

 আমি ভাই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ দেখতে দেখতে ফেড আপ হইয়া গেছি।আমার অনেকদিনের আশা এই দেশটা নারীতান্ত্রিক সমাজে পরিণত হইবো।


বিয়ের সময় আমাদের মায়েরা বলবে আমাদের ছেলে কি ভেসে আসছে নাকি ২০ লক্ষ টাকা দেনমোহর না দিলে ছেলে বিয়ে দিবো না।১৫-২০ টাকা ইনকাম করা মেয়ের পেছন ফেটে যাবে টাকার কথা শুনে।


বউ কাজ করে রাতে বাসায় ফিরে ভাত চাইলে বলবো 'স্বামী হিসাবে আসছি আর ঘরের চাকর বানায় ফেললা,ভাতটাও নিয়ে খাইতে পারো না।আমি দেখে সংসার করে গেলাম অন্য কেউ হইলে খবর ছিলো।'


মাঝেমাঝে বন্ধুরা বাসায় আসবে আর ঘরকে চোগলখোরদের আড্ডাখানা বানায় ফেলবে।কার বউ সেক্সে পারদর্শী,কে কোন পজিশনে খেলে এসব নির্দ্বিধায় বলবো।


শুক্রবারে বিরিয়ানি রাঁধতে রাঁধতে বউয়ের পুরা গুষ্টি উদ্ধার করে ফেলবো।আর যদি ভুলেও বলে বিরিয়ানি ভালো হয় নাই,সারাদিন ঘ্যানর ঘ্যানর করবো।


প্রতি মাসে পাঞ্জাবি কিনার বায়না ধরবো,লুঙ্গি নাই বলে বলে বউয়ের মাথা খাইবো।ঘর ভাড়া দেওয়ার জন্য প্যারা দিবো,ফ্লাট কিনতে ফোর্স করবো।

কোরবানির ঈদে তারা গরুর হাঁট থেকে গরু নিয়ে আসবে।গরু হাটতে না চাইলে বিচিতে টিপ মারবে।গরু দৌড় দিলে রশি ধরে রাখতে গিয়ে থোতনা উড়ে যাবে।

দামড়া শরীর নিয়ে মহিলাদের রিকশায় উঠবো আর ৫ টাকা ভাড়া বেশি চাইলেই থাপ্পড় দিবো।

সর্বশেষ কথা কাটাকাটি হইলেই পুরুষ নির্যাতন আইনের আওতায় আনার হুমকি দিয়ে বউয়ের বিচি শুকায় ফেলবো।ওহ সরি তাদের তো বিচি নাই।


আমি আশাবাদী মানুষ এসব আশা করতেই পারি।

Sunday, 5 February 2023

'তুমি চইলা যাওয়ার পর'

তুমি যাওয়ার পর কতকিছুই না করলাম,

রাইতের ৩ বাজে পোলাপানের লাহান উইঠা কান্নাকাটি করলাম

দেবদাসের মতো তোমার বাড়ির চৌকাঠে বইসা রইলাম

পিপাসিত কুত্তার মতো ছুটলাম এদিক সেদিক

বৃষ্টিতে ভিজলাম

রইদে পুড়লাম

তুমি যেই রাস্তা দিয়া যাইতা ওই রাস্তার প্রতিটা দেওয়ালে চুমু খাইলাম

বর্ষাকাল থাইকা বসন্তকাল অপেক্ষা করলাম

ফুল ফুটতে দেখলাম

ঝরতে দেখলাম

কষ্ট পাইতে পাইতে নষ্ট হইলাম

মদ খাইলাম

গাঁজা খাইলাম

বেশ্যালয় গেলাম

পাগল সাজলাম

পাগলা গারদে চিকিৎসা নিলাম

ফিরা আইসা চিৎকার কইরা কইলাম

'ভালোবাসার মারে চ*

তারপরেও তোমারে ভুলতে পারলাম না।

জীবন এত ছোট যে তোমার চইলা যাওয়ার দুঃখ

ভুলতে ভুলতে

মৃত্যুর ফেরেশতা আমার সামনে আইলো

যাওয়ার আগে একটা কথাই জিগাই

'মনা তুমি থাইকা গেলে কি খুব ক্ষতি হইতো?'


Saturday, 4 February 2023

'একটু ভালোবাসা পাওয়ার আক্ষেপ'

 আমি খেয়াল করে দেখছি যে,আমাদের যাদের ফিন্যান্সিয়াল অবস্থা একটু নিম্ন পর্যায়ের,পোষাক পরিচ্ছেদে আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া নাই,আচার-আচরণে কোনো দাম্ভিকতা নাই তাদের এই সমাজে মূল্য অংকের শূন্যের চেয়েও কম কিংবা আমাদের থাকা না থাকা তাদের কাছে কোনো ম্যাটার করে না।


আমাদের লিখা কবিতায় তারা মুগ্ধ হয় না।আমার বিশ্বাস কবি নজরুলের বিদ্রোহী কবিতাটা আমাদের বর্তমানে লিখলে কেউ পড়তো না,শরীরে কাটা দেওয়ার জায়গায় বিরক্তি নিয়ে বলতো 'এই অখাদ্য পড়ে সময় নষ্ট'।


আমরা কখনো কারোর যোগ্য ভালোবাসার মানুষ হতে পারি নাই।'ইউ ডিজার্ভ বেটার' ক্যাটাগরিতে ফেলে দিয়ে মানুষজন সুখী জীবন কাটানো শুরু করে আমাদের এমনভাবে ভুলে যায় যেনো আমরা কখনো ছিলামই না।


ফ্রেন্ড সার্কেলে আমাদের কথা কেউ মনযোগ সহকারে শুনে নাই।বিশাল হাসির একটা টপিকে কথা বলতে শুরু করলেই তারা ইগনোর করে চলে যায় এদিক সেদিক।আমাদের হাসির মুখটা হঠাৎ দীর্ঘনিঃশ্বাসে পরিণত হয়ে যায়।


স্কুলে ভালো গ্রেড না পাওয়ার ফলে টিচারের বাহবাও পাই নি।কোনোদিন হাসিমুখে আমাদের সাথে তারা কথাও বলে নি।পড়া পারলেও তাদের কিছু যেতো আসতো না আর না পারলে বলতো 'তোমাদের মতো ছেলেদের কাছে এটাই তো আশা করা যায়'।


আমাদের নিয়ে গর্ব করার মতো কেউ কখনো ছিলো না।হোচট খেয়ে পড়ে গেলে কেউ হাত বাড়ানোর বদলে হাসার নিয়তিই ছিলো আমাদের।তাদের হাসি দেখে আমরা নিজেরাও হাসতাম কিন্তু ক্যানো তা জানতাম না।


আমরা ৫-৭ দিন অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকলেও কেউ গরজ করে খোঁজ নেওয়ার নাই।কপালে হাত দিয়ে জ্বরটা তীব্র বেড়েছে বলে একটু মাথায় পানি দেওয়ার জন্যও মায়া দেখায় না।


আমরা আসলে কোনোদিন কোনোকিছুতেই ছিলাম না।আমরা শুধু জন্মানো দরকার বলেই জন্মেছিলাম।আমাদের স্পেশাল কোনো গুণ না থাকার কারণে আমরা কখনো এই পৃথিবীতে ছিলামই না।রুহের জগত থেকে দুনিয়াতে এসেছিলাম শুধু অবহেলা,অযত্ন আর নিজের প্রতি অভিমান করার জন্য।


আপনি বলবেন আমি লাইফ নিয়ে উদাসীন,হতাশ।এই হতাশা,উদাসীনতা কি একদিন্র তৈরি হওয়ার মতো?এই যে কথাগুলো বললাম এই উপলব্ধি কি একটাও মিথ্যা?


আপনি কথাগুলোকে জাজ করতে পারবেন না এই কারণে যে আপনি কখনো আমাদের লাইফটা পান নি।আমাদের মতো মানুষের একটু এটেনশন,একটু ভালোবাসা,যত্ন পাওয়ার আক্ষেপে কখনো পুড়েন নি।


আমরা দিনশেষে এতটাই একা হয়ে উঠি যেনো বিশ্বভ্রামণ্ডের ভিতর একটি বিন্দু জন্ম নিয়েছিলো আর মুছে গিয়েছিলো কিন্তু কখনোই কেউ টের পায় নি।